শেরপুরে ফাঁদ পেতে পাখি হত্যার অভিযোগে ২ জনকে আটকের পরে মুচলেকায় মুক্তি
প্রতিনিধির নাম :
-
প্রকাশিত:
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫
-
৩
বার পড়া হয়েছে

মোঃ আনোয়ার হোসেন শেরপুর জেলা প্রতি নিধি।
শেরপুরে মাছ চাষের পুকুরে ফাঁদ পেতে পাখি হত্যার অভিযোগে বিশেষ অভিযানে এক মৎস্যচাষী ও একজন পাখি শিকারীকে আটক করার পরে নিজের ভুল স্বীকার করার পাশাপাশি এলাকাবাসীর সুপারিশে ও বয়স বিবেচনায় মুচলেকা রেখে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। (২৭ নভেম্বর) বিকেলে শেরপুর শহরের উত্তর মীরগঞ্জ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ অভিযানের নেতৃত্বদেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইশতিয়াক মজনুন ইশতি।
যাদেরকে আটক করা হয়েছিলো তারা হলেন, মৎস্যচাষী সামিউল আলম (৪২) ও পাখি শিকারী আব্দুর রহমান (৭৫)। আটককৃতরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং ভবিষ্যতে আর পাখি শিকার না করার অঙ্গীকার করে অন্যদেরকেও সচেতন করার মুচলেকা দিলে তাদেরকে কোন প্রকার শাস্তি প্রদান না করে, এলাকাবাসীর সুপারিশে ও বয়স বিবেচনায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রস্ফুটিত শেরপুর’ নামে একটি ফেসবুক পেইজে শেরপুর শহরের অদূরে মীরগঞ্জ এলাকায় একটি পুকুরে ফাঁদ পেতে বক ও মাছরাঙা পাখি হত্যার দুইটি ছবি প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি রক্তসৈনিক শেরপুরের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক জাহিদুল খান সৌরভ তাৎক্ষনিক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুঁইয়াকে অবহিত করেন।
পরে ইউএনও সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইশতিয়াক মজনুন ইশতিকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানান। ইউএনও’র নির্দেশ মোতাবেক বৃহস্পিতবার বিকেলে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কয়েকটি ফাঁদ জব্দ করার পাশাপাশি দুইজনকে আটক করে প্রশাসন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি বক ও একটি মাছরাঙা পাখির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে পুকুরের ইজারাদার মাছ চাষী সামিউল আলমকে এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাখি শিকারী আব্দুর রহমানকে আটক করা হয়। আটকের পরে নিজের ভুল স্বীকার করার পাশাপাশি এলাকাবাসীর সুপারিশে ও বয়স বিবেচনায় কোন প্রকার শাস্তি প্রদান না করে মুচলেকা রেখে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এসময় শেরপুর জেলা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব’র সমন্বয়ক সিনিয়র সাংবাদিক হাকিম বাবুল, রক্তসৈনিক শেরপুরের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক জাহিদুল খান সৌরভ, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের সদস্য মুসাফির মুরাদসহ ‘প্রস্ফুটিত শেরপুর’ ফেসবুক পেইজের এডমিন/মডারেটরগন, রক্তসৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ও রক্তসৈনিক শেরপুরের স্বেচ্ছাসেবক/সদস্য, স্থানীয় কয়েকটি পুকুরের মালিক ও স্থানীয় পাখি প্রেমী তরুণ সমাজ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব’র সমন্বয়ক হাকিম বাবুল জানান, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণে পাখির ভ‚মিকা অপরিসীম। বন্য পশু-পাখি হত্যা করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। পরিবেশর ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণের দায়িত্ব সবার।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইশতিয়াক মজনুন ইশতি বলেন, ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী বন্য পশু-পাখি শিকার, হত্যা ও বিক্রি দন্ডনীয় অপরাধ। পরিবেশর ভারসাম্য রক্ষায় এবং বন্যপ্রাণী ও পশু-পাখি সুরক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
সংবাদটি শেয়ার করুন
আরো সংবাদ পড়ুন