1. murshedkamalmizan@gmail.com : অভিযান নিউজ টিভি : অভিযান নিউজ টিভি
  2. info@www.ovizannewstv.com : অভিযান নিউজ টিভি :
মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নতুন শিম চাষে কৃষকের ভাগ্য বদলের গল্প ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ে কৌশিকের মৃত্যুকে ঘিরে নানান কল্পনা জল্পনা নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মানিক গ্রেপ্তার, রোমান ও বোমা সেলিম এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে বরিশাল ঝালকাঠিতে আদালত চত্বরে সাক্ষীকে হাতুড়িপেটা শরীয়তপুরে শিক্ষককে অপমানিত করলেন বিএনপি নেতা, বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা নরসিংদীতে পুলিশ কর্মকর্তার” দাবি সড়কে চাঁদা তুলার কারো অধিকার নেই” বরিশালের হিজলায় বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেন খোকন এর সংবাদ সম্মেলন। শেরপুর জেলার সদর উপজেলা ও শহর বিএনপির কমিটি ঘোষণা খুলনা-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী পাপুলের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় নরসিংদীতে যথাযথ মর্যাদায় (জুলাই গণঅভ্যুত্থান)স্মরণে সিক্স-এ-

সুন্দরবনে ডাকাত আতঙ্কে মধু আহরণ কমেছে ৩৫ ভাগ

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে
মোঃ শামীম হোসেন – স্টাফ রিপোর্টার
দেশে প্রাকৃতিক মধুর সবচেয়ে বড় উৎস সুন্দরবন। প্রতিবছর এপ্রিল-মে দুই মাস সুন্দরবন থেকে মধু আহরণের অনুমতি পান মৌয়ালরা। ঘ্রাণ ও স্বাদে অতুলনীয় এই মধু আহরণে ‘জীবনবাজি’ রাখতে হয় মৌয়ালদের। এত দিন শুধু বনের নদীতে কুমির আর ডাঙায় বাঘের ভয় ছিল। এবার ছিল বনদস্যুদের ভয়ও। দস্যুদের ভয়ে মধু আহরণে যাননি অনেক মৌয়াল। বনে মৌয়ালদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার মধু আহরণ কমেছে ৩৫ শতাংশ। বন বিভাগের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে সুন্দরবন থেকে মোট ৩ হাজার ১৮৩ কুইন্টাল মধু সংগ্রহ করা হয়েছিল। এবার সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৬ কুইন্টালে, যা গতবারের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ কম। গত বছর প্রায় ৮ হাজার মৌয়াল মধু আহরণে নিয়োজিত ছিলেন। এবার নেমে এসেছে প্রায় ৫ হাজারে। সুন্দরবন ও উপকূল সংরক্ষণ আন্দোলনের সদস্যসচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এমন একটা সময়ে মধু আহরণের পরিমাণ কমেছে, যখন সুন্দরবনের মধু জিআই সনদ পেয়েছে। সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা না করলে শুধু দেশের বাজারই নয়, রপ্তানিও হুমকির মুখে পড়তে পারে।সুন্দরবন–সংলগ্ন খুলনার কয়রা উপজেলার মৌয়াল অচিন্ত কুমার রায় বলেন, ছোটবেলা থেকে জঙ্গলে যান, কোনো দিন বাঘ-কুমিরের ভয় পাননি। গত বছরও তিনি মধু আহরণ করতে গিয়েছিলেন। জঙ্গল এখন ডাকাতে ভরা। একবার ধরা পড়লে আর রক্ষা নেই। ভয়ে এবার মধু কাটা বাদ দিয়ে এলাকায় দিনমজুরি করেছেন। চলতি বছর সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন কয়রা গ্রামের মৌয়াল কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডাকাতের ভয়ে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার অনেক কম মৌয়াল বনে গিয়েছিলেন। তাঁরা নৌকায় ৭ জন মৌয়াল ছিলেন। হঠাৎ ডাকাতদের হাতে ধরা পড়ায় মধুর সঙ্গে টাকাও গেছে। ৫২ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সুন্দরবন ডাকাতমুক্ত না হলে আগামী বছর এ পেশা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছেন। পাতিলের মধ্যে রাখা চাকসহ মধু। ১২ জুন বার গহিন সুন্দরবনের পন্ডিতখালী খাল এলাকায় দাকোপের বানিশান্তা ইউনিয়নের ঢাংমারী গ্রামের মৌয়াল আসাদ শেখ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাপ-দাদার পেশা হিসেবে সুন্দরবনে মধু কাইটে আসতিছি, কখনো পিছপা হইনি। আগে বেশ কয়েক বছর বনে ডাকাতির চাপ ছিল না। নির্বিঘ্নে মোম-মধু কাইটে আনতি পারতাম। তবে এবার ডাকাতির ভয়ে জঙ্গলের ভেতরের দিকে যাইতে পারিনি। তাই মধু একটু কম পাইছি। ভয়ে এলাকার অধিকাংশ মৌয়াল এবার জঙ্গলে যায়নি। মধু সংগ্রহ কমার পেছনে ডাকাত আতঙ্ক ছাড়াও আরও দুটি কারণ আছে বলে জানিয়েছেন মৌয়ালরা। তাঁদের ভাষ্য, আগে বন বিভাগ তিন মাস মধু আহরণের অনুমতি দিত। কিন্তু চার বছর ধরে দুই মাস মধু সংগ্রহ করতে দিচ্ছে। এ ছাড়া সুন্দরবনের ৫২ শতাংশ এলাকা অভয়ারণ্য ঘোষণা করে মধু আহরণের অনুমতি দেয় না বন বিভাগ। মধু আহরণ কমার পেছনে এ দুটি কারণও দায়ী। সুন্দরবনে মধু আহরণ কমে যাওয়ার পেছনে আরও একটি কারণের কথা বলেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) প্রধান অধ্যাপক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী। তাঁর ভাষ্য, সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুমের আগে প্রয়োজনীয় বৃষ্টি হলে গাছে গাছে ফুল ফোটে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অনাবৃষ্টির কারণে গাছে ফুল ফোটার পরিমাণ কমে যায়। আবার ফুল ফুটলেও দ্রুত তা ঝরে যায়। এ কারণে ফুল থেকে মৌমাছি আগের মতো মধু আহরণ করতে পারে না। এ জন্য সুন্দরবনে মধুর পরিমাণ কমে গেছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে সুন্দরবন থেকে ৪ হাজার ৪৬৩ কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয়েছিল। ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮ কুইন্টালে। ২০২৩ সালে আরও কমে হয় ২ হাজার ৮২৫ কুইন্টাল। ২০২৪ সালে কিছুটা বেড়ে ৩ হাজার ১৮৩ কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয়েছিল। এবার কমে হয়েছে ২ হাজার ৭৬ কুইন্টাল। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল আড়াই হাজার কুইন্টাল। ধোঁয়া তৈরি করার কাড়ু ও মধু রাখার পাতিল হাতে দুই মৌয়াল। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘সুন্দরবনের পূর্ব অংশে এমনিতেই মধু কম হয়। তার ওপর এবার ডাকাত আতঙ্কে মৌয়ালরা অনেকেই বনে যাননি। এ কারণে মধু সংগ্রহ কমে গেছে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, মৌয়ালদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন। বনাঞ্চলের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি মৌয়ালদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আশা করছেন, আগামী বছর পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট