শংকর ঋষি
সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ৪ নং শাল্লা ইউনিয়নের গ্রাম শাল্লায় বয়ে যাওয়া কালনী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে এক চরম মানবিক বিপর্যয় ও অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
গত কয়েক মাসের তীব্র ভাঙনে নদীর তীরবর্তী ঐতিহ্যবাহী এই গ্রামটি এখন চরম ঝুঁকিতে।
ইতোমধ্যে অন্তত অনেক গুলো পরিবার তাদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে এবং গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার মুখে।
৫ অক্টোবর বুধবার স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক সরজমিন পরিদর্শন গেলে দেখা যায় ভাঙনের তীব্রতায় গ্রামের নৌকা ঘাট সম্পূর্ণরূপে ভেঙে গেছে এবং বহু মানুষের ভিটা জমি, এমনকি শাল্লা মাদ্রাসা পুকুর পর্যন্ত নদীর স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে।
গ্রামবাসীদের আশঙ্কা যে গতিতে নদী ভাঙছে, তাতে আর কিছুদিন এভাবে চললে গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মাদ্রাসা এবং এলাকার বহু মানুষের জীবন-জীবিকার কেন্দ্র শাল্লা বাজারটিও নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।
শাল্লা গ্রামের একজন উদ্বিগ্ন বাসিন্দা বলেন, "নদী আমাদের সব নিয়ে গেল! মাদ্রাসা পুকুরও ভেঙে গেছে। যেভাবে ভাঙছে, তাতে আমাদের বাজার আর মাদ্রাসাটাও রক্ষা করা কঠিন হবে। আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না, কখন আমাদের ঘরটাও ভেঙে যায় সেই ভয়ে আছি।"
ক্ষতিগ্রস্তরা আরও বলেন দীর্ঘদিনের এই ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পরিস্থিতি আজ এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
শাল্লা গ্রামের বাসিন্দা তাফছির আলম চৌধুরী জানান, ভাঙন এখন গ্রাম শাল্লা বাজারের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। এর আগেও কালনী নদীর ভাঙনে শাল্লার বিভিন্ন গ্রামের সরকারি স্কুল, রাস্তাঘাট, এমনকি অন্যান্য বাজারও বিলীন হয়েছে।
বাজার মসজিদের ইমাম আশরাফুল ইসলাম জানান"মেইন নদীর পাড় বর্তমান ভাঙনের প্রায় ২৫০ ফুট ভেতরে ছিল। এই ২৫০ ফুটের ভিতরে অনেক পরিবার ছিল। নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন মাদ্রাসা পুকুরে চলে আসছে।" তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে ভাঙন রোধ করা না গেলে শাল্লা গ্রামের জনবসতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
এ ছারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলি (সুনামগঞ্জ ২) এমদাদুল হকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন পূর্বে আমরা ভাঙন এলাকায় বস্তুায় মাটি ভর্তি করে ভাঙন রোধে পেলেছিলাম শিগ্রী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বিগত বর্ষার মাঝা মাঝির সময়ে এরকম একটা অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করে ইমারজেন্সি সাপোর্টের একটি ব্যবস্থা করেছি, আবার ভাঙন শুরু হয়েছে এই ভাঙন শুরু হওয়া আমাদের নলেজে এসেছে আমরা যতা যত কতৃপক্ষের নিকট লিখত ভাবে জানিয়েছি।
শাল্লা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও ওবায়দুল হক দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি নদী ভাঙনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। নদী পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।"