ভালুকায় আখের বাম্পার ফলন উন্নত জাত, অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকদের যত্নে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে
প্রতিনিধির নাম :
-
প্রকাশিত:
মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫
-
২
বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টের: মো: আল-আমীন, ভালুকা:
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নে এ বছর আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা এবং উন্নত জাতের আখ চাষের ফলে উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। আখ চাষে লাভজনক ফল পাওয়ায় এলাকার অনেক কৃষক ধান ও সবজি চাষের পাশাপাশি আখ চাষে ঝুঁকছেন।কৃষকের আখ চাষ থেকে স্থানীয় অনেক শ্রমিক মৌসুমি ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কাজে অংশগ্রহণ করেন। আখ কাটাই, বহন, পরিবহন, বাজারজাতকরণসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে তারা আয় করার সুযোগ পান। এতে শুধু কৃষকই নয়, স্থানীয় শ্রমজীবী মানুষও আর্থিকভাবে লাভবান হন এবং তাদের পরিবারে সচ্ছলতা আসে।বাংলাদেশ চিনি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বিভিন্ন উন্নত জাতের আখ ভালুকায় ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। এসব জাত উচ্চ ফলনশীল, রোগ প্রতিরোধী এবং চিনির পরিমাণ বেশি হওয়ায় চাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতগুলো হলো— ইসডু 94-301 (দ্রুত বৃদ্ধি, সোজা কাণ্ড, খরা সহনশীল; ফলন ৮০–৯০ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২–১৩%), ইসডু 94-302 (রস বেশি, রোগ প্রতিরোধী, চ্যাপ্টা কাণ্ড; ফলন ৮৫–৯৫ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২%), ইসডু 94-303 (বেলে দোআঁশে ভালো জন্মে, পোকামাকড় কম; ফলন ৭৫–৮৫ টন/হেক্টর; চিনির হার ১১–১২%), ইসডু 94-304 (শক্ত কাণ্ড, ভেঙে পড়া কম, বর্ষায় ভালো; ফলন ৮০–৯০ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২%), ইসডু 98-355 (রোগ প্রতিরোধী, পাতলা কিন্তু রসালো কাণ্ড; ফলন ৮৫–৯৫ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২.৫%), ইসডু 98-356 (দ্রুত পাকতে সক্ষম, শীতে উপযোগী; ফলন ৭৮–৮৮ টন/হেক্টর; চিনির হার ১১.৮%), ইসডু 99-367 (লম্বা কাণ্ড, খরা সহনশীল, চিনি বেশি; ফলন ৮৫–৯০ টন/হেক্টর; চিনির হার ১৩%), ইসডু 99-368 (বর্ষায় ভালো জন্মে, রস বেশি; ফলন ৮০–৯০ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২%), ইসডু 00-390 (শক্ত ও মোটা কাণ্ড, দীর্ঘদিন সংরক্ষণযোগ্য; ফলন ৮৫–৯৫ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২.৫%), ইসডু 00-391 (দ্রুত বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধী; ফলন ৮০–৮৮ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২%), ইসডু 00-392 (শীত ও গরমে সমান ফলন; ফলন ৮৫–৯০ টন/হেক্টর; চিনির হার ১২.৩%) এবং ইসডু 00-393 (উচ্চ ফলনশীল, বাজারে চাহিদা বেশি; ফলন ৯০–১০০ টন/হেক্টর; চিনির হার ১৩%)।এলাকার কৃষক মুসলেম উদ্দিন জানান, আগে তিনি ধান চাষ করতেন কিন্তু আখ চাষে লাভ বেশি হওয়ায় এখন তিনি আখের দিকে ঝুঁকেছেন। একবার আখ লাগালে প্রায় ১২ মাস পর ফসল তোলা যায় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, “আগামী মৌসুমে আখ চাষ আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে কৃষকের আয় এবং এলাকার অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।”
সংবাদটি শেয়ার করুন
আরো সংবাদ পড়ুন