সিরাজুল ইসলাম জেলাপ্রতিনিধি,শরীয়তপুর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শরীয়তপুর জেলা শাখার উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে এক বিশাল গণমিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বাদ আসর শরীয়তপুরের রাজপথ প্রকম্পিত হয় জামায়াতের নেতা-কর্মী ও সহস্রাধিক সমর্থকের পদযাত্রায়। মিছিলে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয় এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি তোলা হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত ইসলামীর শরীয়তপুর জেলা আমির মাওলানা আব্দুর রব হাশেমী, ফরিদপুর অঞ্চল টিম সদস্য এবং শরীয়তপুর-পালং-জাজিরা আসনের এমপি প্রার্থী ড. মোশারেফ হোসেন মাসুদ। বক্তারা অভ্যুত্থানকালীন ও পরবর্তী সময়ে “স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার” অধীনে সংঘটিত গুম, খুন, চাঁদাবাজি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দা জানান। ড. মাসুদ তার বক্তব্যে বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে যারা নিরীহ জনগণের রক্ত ঝরিয়েছে, তাদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। এ পর্যন্ত কোনো প্রকৃত বিচার হয়নি, বরং অবহেলার শিকার পরিবারগুলো আজও ন্যায়বিচারের জন্য হাহাকার করছে।মূল দাবিসমূহ১. অভ্যুত্থান ও এর পূর্ববর্তী গুম-খুনের বিচার: জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানকালে এবং পূর্ববর্তী “আইনের নামে” সংঘটিত সকল হত্যা, গুম ও সহিংসতার স্বাধীন তদন্ত ও বিচার দাবি করা হয়। ২. আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহিতা: অভ্যুত্থানকালে নিরাপত্তা বাহিনীর কতিপয় সদস্যের “অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ” এবং রাজনৈতিক নির্দেশনায় কাজ করার অভিযোগ এনে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। ৩. ন্যায়ভিত্তিক শাসন কায়েম: বক্তারা বাংলাদেশে “আল্লাহর আইন ও দাঁড়িপাল্লার ন্যায়বিচার” প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জামায়াতের রাজনৈতিক সংগ্রামের প্রতি সমর্থন চান এবং আগামী নির্বাচনে ভোটারদের “সঠিক সিদ্ধান্ত” নেওয়ার আহ্বান জানান। সাংস্কৃতিক আয়োজন ও জনসমর্থন:মিছিল শেষে শরীয়তপুরের শহীদ মামুন চত্বরে জামায়াতের শরীয়তপুর জেলা শাখার উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে অভ্যুত্থানের ইতিহাস, সরকারি দমন-পীড়ন ও শহীদদের সংগ্রামী চিত্র তুলে ধরা হয়। স্থানীয় ছাত্র-যুবক ও সাধারণ জনগণের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।সমাপ্তি ও রাজনৈতিক ইঙ্গিত জামায়াতের এই সমাবেশ শরীয়তপুরে তাদের সংগঠনিক শক্তি এবং জনসমর্থনের একটি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে। তাদের এই আয়োজন স্থানীয় পর্যায়ে একটি রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। নেতারা দাবি করেছেন, আমরা বিচার চাই , চাই একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত হবে।