অপসাংবাদিকতার ভয়াল ছায়া: অম্বিকাগঞ্জ কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে তথাকথিত সাংবাদিক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
প্রতিনিধির নাম :
-
প্রকাশিত:
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫
-
৪৫
বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক: নিজস্ব সংবাদদাতা
অম্বিকাগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে নিজেকে ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দেওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিরুদ্ধে। তাঁর এই তথাকথিত ‘সংবাদ কার্যক্রম’কে ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত বলেই দাবি করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা।সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে রিয়াদ কলেজের একাদশ শ্রেণির এক মেধাবী শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির ফরমের ছবি ও নাম ব্যবহার করে দাবি করেন—কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদন ফরম বাবদ ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্পষ্ট নির্দেশ অনুযায়ী, চলতি শিক্ষাবর্ষে কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক টাকাও নেওয়া হয়নি। সবচেয়ে গুরুতর বিষয়, এ প্রতিবেদন তৈরিতে কোনো সরেজমিন তদন্ত, সাক্ষাৎকার কিংবা দলিলপত্র উপস্থাপন করা হয়নি। বরং ময়মনসিংহ সদর উপজেলার এক রাজনৈতিক নেতার ফেসবুক পোস্ট হুবহু কপি করে ‘সংবাদ’ হিসেবে প্রচার করা হয়। সত্য বলায় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা!এই বিভ্রান্তিকর প্রচারের বিরুদ্ধে যখন কলেজের এক ছাত্র—সোলায়মান কবির সত্য উদঘাটনে প্রতিবাদ জানায়, তখন রিয়াদ উল্টো তার বিরুদ্ধেই ৫০ লক্ষ টাকার মানহানির মামলার হুমকি দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ একে শিক্ষার্থীর কণ্ঠরোধের ভয়াবহ প্রচেষ্টা এবং চরম অপেশাদার আচরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শিক্ষকের ছবি ছড়িয়ে মানহানি ও রাজনৈতিক আক্রমণঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক জনাব মোঃ মাহবুবুল আলম (রাসেল)-এর ছবি, পদবি ও পরিচয় ব্যবহার করে রিয়াদ সামাজিক মাধ্যমে ব্যঙ্গাত্মক ও রাজনৈতিক মন্তব্য ছড়িয়ে দেন। পোস্টটিতে লেখা হয়:”সুময় আর দুঃসময় বুঝেন না, পদ পদবী বুঝেন না। এতটুকু বুঝেন তিনি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। তিনি বর্তমানে অম্বিকাগঞ্জ কলেজের সহকারী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত মাহবুবুল আলম রাসেল। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শিক্ষকরা এখনো বহাল তবিয়েতে। অনুসন্ধান শেষ, বিস্তারিত আসছে।”ই বক্তব্যে শুধুই একজন সম্মানিত শিক্ষককে হেয় করা হয়নি—বরং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁকে টার্গেট করা হয়েছে। বিষয়টি যে শুধু মানহানিকর নয়, তা হেট-স্পিচ ও সাইবার হুমকির আওতাতেও পড়ে বলে জানান কলেজের শিক্ষকরা।অম্বিকাগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকবৃন্দ বলেন,“আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তবে সংবাদ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ওঠে এবং একজন শিক্ষার্থী বা শিক্ষককে অপমান করে—তাহলে সেটা আর সাংবাদিকতা থাকে না, সেটা হয় প্রতিহিংসার হাতিয়ার। প্রয়োজনে আমরা আইনগত ব্যবস্থাও নেব।”এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, রিয়াদ শিক্ষার্থীদের মন্তব্যে ‘দেখে নেব’ জাতীয় ভাষায় পাল্টা হুমকি দেন, যা সাইবার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী অপরাধ। স্থানীয় অভিভাবক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং রিয়াদের অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছে। ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে “#StandWithAmbikaganj” ও “#TruthForSolaiman” হ্যাশট্যাগে ছাত্রছাত্রী ও সচেতন নাগরিকরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন।প্রশ্ন উঠছে—সাংবাদিকতার নামে এই ভয়ংকর অপপ্রচার ও মানহানির নেপথ্যে কী রাজনৈতিক চক্রান্ত? রিয়াদ কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন? সময় এসেছে এমন অপসাংবাদিকতা, হুমকি ও সামাজিক বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের।
সংবাদটি শেয়ার করুন
আরো সংবাদ পড়ুন