প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ১, ২০২৫, ৮:১৪ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ৫, ২০২৫, ৩:১৩ পি.এম
কোরবানির ইতিহাস কোথা থেকে শুরু? কে দিলেন প্রথম কোরবানি?
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কোরবানি মানেই কি শুধু পশু জবাই? না, বরং এটি নিখাদ আত্মত্যাগের প্রতীক—আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্যের এক অকৃত্রিম প্রমাণ। ইসলামি ইতিহাসে কোরবানির সূচনা হয়েছে বহু আগেই।পবিত্র কোরআনের ভাষায়, কোরবানি শুধু মাংস বা রক্ত নয়—এটা মূলত তাকওয়ার প্রকাশ।আল্লাহ তাআলা বলেন:“তাদের গোশত ও রক্ত কখনো আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।”—সূরা হজ: আয়াত ৩৭এই আয়াতই প্রমাণ করে, কোরবানির মূল উদ্দেশ্য আল্লাহভীতি ও আত্মসমর্পণ।ইতিহাসের প্রথম কোরবানি: হাবিল ও কাবিলকোরআনের বিবরণ অনুযায়ী, মানব ইতিহাসের প্রথম কোরবানি করেন আদম (আ.)-এর দুই পুত্র—হাবিল ও কাবিল। তারা উভয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করেন। হাদিস ও তাফসির মতে, হাবিল একটি ভেড়া কোরবানি করেন এবং কাবিল তার উৎপাদিত ফসল উৎসর্গ করেন।তৎকালীন শরিয়ত অনুযায়ী, যার কোরবানি কবুল হতো, আকাশ থেকে আগুন নেমে তা গ্রহণ করত। হাবিলের কোরবানি কবুল হয়, কিন্তু কাবিলেরটি হয় না।এ থেকেই বোঝা যায়, আল্লাহর কাছে বস্তু নয়—নিয়ত ও খাঁটি ঈমানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।ইবরাহিম (আ.)-এর কোরবানি: ঈমানের চূড়ান্ত পরীক্ষাকোরবানির ইতিহাসে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ও গা শিউরে ওঠা ঘটনা হলো ইবরাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর কাহিনি। আল্লাহর আদেশে তিনি প্রিয় সন্তানকে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হন। তিনি যখন ছুরি চালাতে উদ্যত হন, তখন আল্লাহ তা বন্ধ করে দেন এবং এর পরিবর্তে জান্নাত থেকে একটি পশু পাঠান।এই মহান আত্মত্যাগের স্মরণেই মুসলিমরা ঈদুল আজহা পালন করে।কোরবানি মানেই আত্মত্যাগকোরবানির অর্থ হলো ‘কাছাকাছি হওয়া’। এটি শুধুমাত্র পশু জবাইয়ের অনুষ্ঠান নয়; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক মহান ইবাদত। সম্পদ, সময়, শ্রম, ভালোবাসা—সবকিছু আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দেওয়ার নাম কোরবানি।ইসলামী বিধানে কোরবানির গুরুত্বপবিত্র কোরআনের বহু আয়াতে কোরবানির কথা উল্লেখ আছে। যেমন:“আর হজ ও উমরা আল্লাহর জন্য পূর্ণ কর। অতঃপর যদি তোমরা বাধাগ্রস্ত হও তবে যেটি সহজলভ্য, তা কোরবানি করো…”—সূরা বাকারা: আয়াত ১৯৬এই আয়াত থেকে স্পষ্ট হয়, কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা আত্মশুদ্ধির পথ খুলে দেয়।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত