1. murshedkamalmizan@gmail.com : অভিযান নিউজ টিভি : অভিযান নিউজ টিভি
  2. info@www.ovizannewstv.com : অভিযান নিউজ টিভি :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শেরপুরে জামায়াতে যোগ দিলেন ছাত্রদল নেতা আমাদের মূল উদ্দেশ্য শিশুদের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা বাংলাদেশ ক্বওমী ব্লাড ডোনার পরিষদ সিলেট বিভাগ এর কমিটি ঘোষণা সুন্দরবনের জলদস্যু বাহিনীর ২ সদস্য আটক, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার বরিশাল হিজলা উপজেলায় মাদরাসার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে প্রতিবাদ সভা বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন হবে – সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন নন্দীগ্রামে কৃষকদল উপজেলা ও পৌর কমিটি ঘোষণা কাজিপুরে আগুনে পুড়ে অঙ্গার ছাগল ও হাস মুরগী- ঝলসে গেছে গৃহিনী সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদের ইরান সফর বাংলাদেশে চীনের তৈরি হাসপাতাল এর জন্য পঞ্চগড়বাসী দাবিদার

দাকোপে দেড় মণ টমেটোয় এক কেজি চাল!

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

মোঃ শামীম হোসেন – স্টাফ রিপোর্টার

ক্ষেতে চাষ করা সারি সারি গাছে ঝুলে আছে টমেটো। গাছ থেকে মাটিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সব। লাখ টাকা বিনিয়োগে এ টমেটোতেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার কথা ছিল চাষিদের। কিন্তু তা এখন দুঃস্বপ্নের কারণ। বিক্রি তো দূরের কথা কোনো রকমে কোথাও ফেলতে পারলেই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচেন দাকোপের চাষিরা। তিন বিঘা জমির টমেটো এবার মাত্র ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন এক চাষি, বাকি টেমেটো ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। চাষের আগে লাভের সম্ভাবনা দেখলেও এখন বিপাকে টমেটো চাষিরা। বাজারে নিয়ে কোনো রকমে কিছু টমেটো বিক্রি করলেও তাতে শ্রমিক ও পরিবহন খরচই উঠছে না। হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণ করতে পারছেন না তারা।দাকোপ উপজেলার বাজুয়া, লাউডোব, কৈলাশগঞ্জ, বানিশান্তা, দাকোপসহ গ্রামের চাষিরা এখন ক্ষতির সম্মুখীন। টমেটো বিক্রি করতে না পারায় ময়লার ভাগাড়ে ফেলছেন চাষিরা। উপজেলার কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম পাড়া গ্রামের চাষি বিজন গাইন বলেন, ‘গেল বার টমেটো বিক্রি করে বেশ লাভ হয়েছিল। এবারও চাষ করে ছিলাম। প্রতিবিঘা জমিতে চাষবাস থেকে শুরু করে টমেটো চারা সার, সুতলি, বাঁশের খুঁটি কীটনাশক শ্রমিক খরচ সেচসহ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ১০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করছি। বাকিগুলো ক্ষেতেই ঝরে পড়ে পচে গলে নষ্ট হচ্ছে। বিশাল ক্ষতি হয়ে গেল।’এমন অবস্থার কারণ জানতে চাইলে এই চাষি বলেন, ‘বাজারে ক্রেতা নেই, চাহিদাও নেই। সরংক্ষণের হিমাগার নেই। সড়ক যোগাযোগ ভালো না থাকায় বাইরের জেলা থেকে কোনো পাইকার এসেও মাল কেনে না। এসব কারণে এবার টমেটো চাষ করে আমরা সব চাষিরা মহাবিপদে পড়েছি।’সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অন্য জেলা থেকেও কেউ কিনতে আসছেন না টমেটো। বাজুয়া গ্রামের অনিমেষ মন্ডল বলেন, ‘এলাকায় বাজারে নিয়ে গেলে প্রতিকেজি টমেটো ২ টাকা কেজি আর স্থানীয় পাইকার ক্ষেত থেকে টমেটো কিনলে ১ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়। ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ করে জমিতে টমেটো চাষ করে এখন মনে হচ্ছে ঋণের দায়ে এলাকা ছাড়তে হবে। একই গ্রামের নির্মল বলেন, ‘গেল ১ মাস ধরে টমেটোর দরপতন চলছে। চাষিরা বস্তা ভরে ইজিবাইক বা ট্রলিতে করে টমেটো বিক্রির জন্য বাজুয়া ও চালনা বাজারে পানির দরে টমেটো বিক্রি করেন। প্রতি মণ ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করে পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মজুরির টাকা না ওঠায় টমেটো বাজারে বিক্রি তো দূরের কথা, ক্ষেত থেকে তোলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন সবাই।’আরেক চাষি নুর মিয়া বলেন, ‘বাজারে এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৮০০ আর এক মণ টমেটোর দাম বাজারে ৮০, ক্ষেতে ৪০ টাকা। ২০ মণ টমেটো বিক্রি করতে পারলে এক কেজি মাংস কেনা যায়। দেশে কাচামরিচ, টমোটোর ঘাটতি দেখা দিলে সরকার ভারত থেকে আমদানি করে। অথচ হিমাগার না থাকায় আমরা সবজি সংরক্ষণ করতে পারি না। সবজি সংরক্ষণ করতে পারলে ভারত থেকে কাঁচামরিচ টমেটো আমদানি করা লাগতো না।’ লাউডোব গ্রামের চাষি বাবুরাম সরদার বলেন, ‘রমজান মাসে বাজারে চাল, ডাল তেল, পেঁয়াজ, রসুন, ছোলা, মাছ, মাংস, সব কিছুর দাম বেশি শুধু সবজির দাম কম। আড়াই মণ টমেটোর দামে এক লিটার তেল কিনতে হয়। এ বছর পানির দামে সবজি বিক্রি করেছেন তাই আগামীতে সবজি চাষের আগ্রহ থাকবে না।’ আজিজ নামে আরেক টমেটো চাষি বলেন, ‘মনে হচ্ছে টমেটো চাষ করে বড় কোনো অপরাধ করেছি। নিজের খেতের টমেটো এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টমেটো চাষ করেছিলাম স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য। অথচ এখন এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে মনে হচ্ছে মানুষকে ফ্রিতে দিলেও টমেটো নিবে না। পাইকারি প্রতি মণ টমেটো বিক্রি করতে হচ্ছে ৪০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম ১ টাকা করে। আর বাজারে এক কেজি চালের দাম ৬০ টাকা। তার মানে আমি দেড় মণ টমেটো বিক্রি করলে এক কেজি চাল কিনতে পারব।’ বানিশান্তা গ্রামের চাষি আব্দুল হালিম বলেন, ‘বন্যা বা অতিবৃষ্টির কারণে দেশে বর্ষাকালীন সবজি নষ্ট হলে আলু, কাঁচামরিচ, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজির সংকট দেখা দেয়। তখন পাশের দেশ ভারত থেকে ডলার দিয়ে উচ্চমূল্যে সবজি আমদানি করে চাহিদা পূরণ করে। সবজি আমদানি করতে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। এ টাকা দিয়ে দাকোপে একটি সবজি সংরক্ষণের হিমাগার নির্মাণ করলে ভারত থেকে সবজি আমদানি করতে হতো না।’ সবজি চাষিরা বছরের পর বছর হিমাগার স্থাপনের দাবি জানিয়ে এলেও কোনো সরকার তাদের সমস্যা নিয়ে ভাবছেন না। কোথাও সবজির হিমাগার নেই। এতে সবজি চাষিদের পাশাপাশি সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তার দাবি, গেল বার সবজির ভালো দাম পেয়েছিলেন তাই এবার ধানের জমিতে সবজি চাষ করেছেন। তাই বেশি উৎপাদন হয়েছে। তবে আগাম জাতের সবজি চাষ করলে চাষিরা এত সমস্যায় পড়তেন না। তারা একই প্রজাতির হাইব্রিড সবজির চাষ করেছেন তাই সব সব সবজি একসঙ্গে সংগ্রহের উপযোগী হয়ে ওঠেছে। এজন্য কৃষকদের আগাম জাতের সবজি চাষের পরামর্শ দেন তিনি। সবজি সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, হিমাগারে নিরবচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহ করা কঠিন। বিদ্যুৎ না থাকলে সবজি পচে নষ্ট হবে। তবে চাষিদের অবিক্রিত সবজি সংরক্ষণের জন্য একটি হিমাগার স্থাপনে প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়া আছে। প্রকল্পটি পাস হলে চাষিরা সবজি সংরক্ষণ করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট