মোঃ শামীম হোসেন - স্টাফ রিপোর্টার
খুলনার দাকোপের মাঠ জুড়ে চাষ করা হয়েছে তরমুজ। যেদিকে চোখ যায় সেই দিকে দেখা যায় তরমুজ খেত। কোথাও যেন পা ফেলার যায়গা নাই। বাতাসে গাছের পাতা নড়তে থাকলে চাষিদের মনও চাঙা হয়ে উঠছে। মৌসুমের শুরুতেই কুয়াশা থাকলেও এখন প্রকৃতি বেশ অনুকূলে। সমস্ত বিলে ভরে গেছে তরমুজের চারা। তরমুজের পাতার ডগ দেখে স্বপ্ন বুনছেন দাকোপের চাষিরা। গত কয়েক বছরে তরমুজ চাষে বদলে গেছে দাকোপের চাষিদের জীবনমান। চাষিরা জানান, এখনও পর্যন্ত তরমুজের চারার ভালো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে গাছের চেহারা খুবই ভালো। এজন্য বাড়তি যত্ন শুরু করেছেন তারা। গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া, পানি ছিটানো, ঘাস বাচা, কীটনাশক ছিটানোসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের যত্ন নিচ্ছেন। চাষীরা জানান এ বছর আবহাওয়া এখনও চাষীদের তরমুজ চাষের অনুকূলে আছে। তাই ফলন ভালো হবে। যদিও তরমুজ চাষ তারা এবছর আগাম করতে পারছে না তবে গরম থাকলে দাম বেশি পাবে। গতবছর খুলনার দাকোপসহ জেলায় তরমুজের চাষ কম হওয়ায় এবার চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় আশানুরূপ ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন তারা। সরেজমিনে দাকোপের বাজুয়া, লাউডোব, বানিশান্তা, কৈলাশগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে শুধু তরমুজ চাষ করা হয়েছে। বাতাসে দুলছে গাছের পাতা আর সেই দোলায় চাষিদের মনও চাঙা। তরমুজ গাছ বড় করে তরমুজ ধরাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের যত্ন করছে চাষীরা। একটু দম ছাড়ার সময় নাই তরমুজ চাষীদের। ছেলে -মেয়ে, স্বামী -স্ত্রী কেউ বসে নেই সকলে দিন-রাত তরমুজ খেতে কাজ করে চলেছে। ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়ে গেছে এলাকায়। দাকোপ এলাকার গ্রামে বিভিন্ন এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চাষি অভিযোগ করেন, তরমুজ চাষিদের সঠিক পরামর্শ দেওয়ার মতো মনোভাব কৃষি বিভাগের নেই এবং সব ধরনের প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত তারা। সরকারি প্রণোদনাগুলোর সঠিক বন্টন হলে চাষিরা আরও উপকৃত হতো ও নতুন নতুন চাষি বাড়তো। কৈলাশগঞ্জ এলাকার চাষি নুর হোসেন বলেন, তরমুজ চাষ এবার ভালোই হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। একই উপজেলার বাজুয়া এলাকার সুভাষ বলেন, সঠিক দাম পেলে চাষিরা আরও লাভবান হবেন। তরমুজ চাষ গত বছরের চেয়ে বেশি। সঠিক পরিচর্যা করলে ভালো ফলন হবে। আশা করছি আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে লাভবান হবেন।দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এই অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি লাভজনক চাষ হচ্ছে তরমুজ চাষ। দেশে-বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। এ বছর যে আবহাওয়া পরিষ্কার, বৃষ্টি-কুয়াশা নেই, ঝড় বাতাস নেই, সেই হিসেবে কৃষি বিভাগ আশা রাখছে চাষিরা যদি ভালো করে পরিচর্যা করে তাহলে তরমুজের ফলন ভালো হবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।